Pages

Tuesday, January 22, 2008

তোমাদের হিংস্র মুখমন্ডলের মানচিত্র জ্বালিয়ে দেবো

বেনিয়া অর্থলোলুপ সাম্রাজ্যবাদীরা শোনো
যতদূর এগিয়ে এসেছো সভ্যতাদের ধ্বংস করে করে
ওখানেই দাঁড়িয়ে যাও

আর আগে বাড়ার চেষ্টা করবে না
তোমাদের হিংস্র মুখমন্ডলের মানচিত্র জ্বালিয়ে দেবো।

পৃথিবীর আহ্নিক গতি বার্ষিক গতি সাক্ষী
আমরা তোমাদের এটম ক্লাস্টার বোমার ভয়ে ভীত নই
আমরা মরতে মরতে বেঁচে আছি শতাব্দীর পর শতাব্দী
তোমাদের সহস্র বছরের অত্যাচার সাক্ষ্য দেবে
লাখো লাখো নারী ও শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা করে
তোমরা সারমেয়দের জেনারেল পদমর্যাদা দিয়েছো

আর আগে বাড়ার চেষ্টা করবে না
তোমাদের হিংস্র মুখমন্ডলের মানচিত্র জ্বালিয়ে দেবো।

মসজিদের পেছনে মন্দির
মন্দিরের পেছনে মসজিদ
মসজিদের পেছনে গীর্জা
গীর্জার পেছনে মসজিদ
এইভাবে এক জাতির পেছনে আরেক জাতিকে
উস্কে দিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ লাগিয়ে দাও তোমরা।
গরীব অসহায় দুর্বল মানুষেরা
তোমাদের সাধু সন্তের মতো চেহারা দেখে
তোমাদের দিকে বিপুল ভরসায় পাতে হাত
তোমরা তাদের উপর করো বোমার আঘাত

আর আগে বাড়ার চেষ্টা করবে না
তোমাদের হিংস্র মুখমন্ডলের মানচিত্র জ্বালিয়ে দেবো।

কী করেছো ইরাকে?
কী করেছো ফিলিস্তিনে?
কী করেছো ইরানে ?
কী করেছো রাশিয়ায় আফগানিস্তানে?
কেন এতো আর্ত চিত্কার এশিয়ায় আফ্রিকায়?
কেন শত শত হেক্টর ফিলিস্তিনের ভূমি
তুলে দিয়েছো ইজরায়েলের হাতে?
কেন আরব সাগরের তেল লুট করে নিয়ে
ইজরায়েলকে দিয়েছো এটমিক এনার্জি?
তোমরা বলে বেড়াও- দেশে দেশে বছরভর মানবিক সাহায্য দাও
তোমাদের মানবিক সাহায্যের গোষ্ঠী মারি!
হাজার বিলিয়ন লুট করে নিয়ে
দশ মিলিয়ন বন্টন করে দেখাও তোমরা দরদী!

আর আগে বাড়ার চেষ্টা করবে না
তোমাদের হিংস্র মুখমন্ডলের মানচিত্র জ্বালিয়ে দেবো।

আরব সাগর পারের দালালেরা তোমাদের শক্তি যুগিয়েছে
তোমাদের 'শাটল ডিপ্লোমেসী' আমরা বুঝি
আমরা বছরের পর বছর উত্তরনের উপায় খুঁজি
কিন্তু আমাদের ঘরের শত্রু বিভীষণ-দালালদের
ষড়যন্ত্রের কবলে পড়ে যাই বারবার।
তবু তোমাদের স্মরণ করিয়ে দেই-
বাংলাদেশ নামের দেশটির জন্মের ইতিহাস
ধর্মকে বর্ম হিসাবে ব্যবহার করে
তোমাদের পা চাটা দালালেরা বাংলাদেশের জন্ম ঠেকাতে পারে নি।
ভিয়েতনামের শাদা মনের মানুষেরা
সফলভাবেই তাড়িয়েছিল সাম্রাজ্যবাদীকে।

চেঙ্গিস হালাকু খানেরা টাইগ্রিস ফোরাতের পানি রক্ত লাল করেছিল
তোমরা ইরাককে ক্ষত বিক্ষত করেছো
কিন্তু ইরাক মরে যায় নি
পোষা পাপেটদের দিন শেষ হয়ে যাবে
ইরাক আবার সেই ইরাক হবে
তোমাদের পেছনে পালাবার অধ্যায় শুরু হবার অপেক্ষা শুধু

আর আগে বাড়ার চেষ্টা করবে না
তোমাদের হিংস্র মুখমন্ডলের মানচিত্র জ্বালিয়ে দেবো।

তোমাদের সর্বভূক তৃষ্ণা কখনো মেটে নি
কে বলেছে সমগ্র পৃথিবী তোমাদের নিয়ন্ত্রণে?
বহুজাতিক মুষ্ঠিবদ্ধ হাত ঐক্যবদ্ধ
আস্তিক নাস্তিক ধার্মিক যারা তোমাদের সাথে আছে
তারা দালাল তারা শত্রু চিহ্নিত
আমাদের আস্তিক নাস্তিক ধার্মিকেরা সম্মিলিত ক্ষুব্ধ ক্ষিপ্ত
তোমাদের বহুজাতিক কর্পোরেটের বিরুদ্ধে
সদা জাগ্রত অতন্দ্র প্রহরী সব

আর আগে বাড়ার চেষ্টা করবে না
তোমাদের হিংস্র মুখমন্ডলের মানচিত্র জ্বালিয়ে দেবো।

Wednesday, January 2, 2008

'কথায় কথায় মৌলবাদ বলেন তারা কি জর্জ বুশের লোক নয়?'

'কথায় কথায় মৌলবাদ বলেন তারা কি জর্জ বুশের লোক নয়?'

আহমদ ময়েজ সম্পাদিত 'ভূমিজ' এ প্রকাশিত মনজুরুল আজিম পলাশ কর্তৃক নেয়া ফরহাদ মজহার এর সেই আলোচিত সাক্ষাৎকারটির অংশ বিশেষ এখানে তুলে দেয়া হলো।
'নোয়াখালির সাথে মার্কিন মুল্লকের, লুঙ্গির সাথে ঝুটির, কোরআন হাদীসের সাথে কমিউনিষ্ট মেনিফেস্টোর, লালনের সাথে লেলিনের, জেহাদের সাথে শ্রেণী সংগ্রামের, ঐতিহ্যের-নবপ্রাণের সাথে মার্কসবাদের সর্বোপরী মুসলমানিত্বের সাথে মনুষ্যত্বের সংযোগ বা সমন্বয় বা আলোচনার চেষ্টা যিনি করছেন তাঁকে নিয়ে তো চমৎকার বিতর্ক হতেই পারে।'
ফরহাদ মজহার বলেছেন-
'আমাদের নিজেদের সরকার নেই। যতই আমরা দাবী করি আসলে সরকার চালাচ্ছে বিদেশীরা, বিভিন্ন সংস্থা, এজেন্সি ইত্যাদি। আমি বলব আওয়ামীলীগ বলি আর বিএনপি- সরকার আমাদের জন্য সমস্যা না, আপনি অলওয়েজ কাউকে না কাউকে পাবেন দেশকে ভালোবাসে, কারণ আপনি একা ভালোবাসেন এটা হতে পারে না। বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় সমস্যা প্রথম বাইলেটারাল ডোনার্সরা এবং আপনার ডিপ পলিটিসাইজেশন, যে একটা বিশাল প্রাইভেট সেক্টরের এনজিও গড়ে উঠেছে যাদের জন্য অনেক সময় ভালো কিছু করা যাচ্ছে না। সরকারের সাথে বিরোধিতা হয় ডোনার্সদের জন্য।'
'নাস্তিক্যবাদ খুব নিম্নস্তরের দর্শন।......আমি নাস্তিক্যবাদী না, ডেফিনিটলি, আমি নাস্তিক্যবাদের বিরুদ্ধে, আমি মনে করি নাস্তিক্যবাদের জন্য বাংলাদেশের অনেক ক্ষতি হয়েছে।'......আমাদের দেশে যারা মার্কসিস্ট দাবী করেন বা কথায় কথায় মৌলবাদ বলেন তারা কি জর্জ বুশের লোক নয়? এখন আমাদের কী করতে হবে? আমি মৌলবাদ শব্দটি পছন্দ করি না।.....দেখুন, মৌলবাদ শব্দটি পলিটিক্যালি লোডেড ডাউন, এটা বিশ্বাস অবিশ্বাসের বিষয় নয়। মৌলবাদী হলেন কি হলেন না- এটা ইমমেটেরিয়েল। আচ্ছা হ্যাঁ একাত্তুরের বিষয়ে আমি আপনার সাথে একমত, ওদের বিচার হওয়া উচিত এবং ফাঁসি হলে ফাঁসি দেয়াও উচিত, কারা এটা করে নি, আসুন যারা করে নি তাদের আগে কাটগড়ায় দাঁড় করাই। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় ছিল, তথকথিতভাবে যারা মৌলবাদ বিরোধি তারা ক্ষমতায় ছিল কিন্তু কিছুই করে নি। কিন্তু যে ৭১ এ জন্মগ্রহনই করে নাই, হয়তো শুনেছে যে জেহাদ বলে একটা ভাষা আছে যার মাধ্যমে সে তার পলিটিক্যাল রাগ প্রকাশ করতে চাইছে- তাকে আমি আঙ্গুল দিয়ে রাজাকার বলবো না।......আমি বলছি যে কিছু না জেনে আমি যদি আগেই কাউকে মৌলবাদী বলে আখ্যা দিয়ে দেই তাহলে ডায়লগের কোন জায়গা থাকে না।'
'আমাকে যদি আপনি এখনো জিগ্যেস করেন আমি বলবো, লাদেন ইজ এ্যা ফিকশন, আমেরিকা লাদেনকে তৈরী করেছে যুদ্ধ করার জন্য। আপনি ১৩০ কোটি মানুষকে মৌলবাদী বলে বোমা ফেলতে চাচ্ছেন তখন পলিটিক্যালি আমার প্রথম কাজ হবে এদেরকে রক্ষা করা- সে কারণে আমাকে দেখাতে হয়েছে বিভিন্নভাবে যে আমাদের দেশের মানুষ নানাভাবে শ্রেণী সংগ্রাম করে তার মধ্যে জেহাদের ভাষা একটা।'
'দেখুন, বিপ্লবী রাজনীতি যদি আপনি চিন্তা করেন তাহলে সমস্ত ইকুয়েশন হবে ইকোনোমিক জায়গা থেকে।.......মৌলবাদের পক্ষ-বিপক্ষ, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ-বিপক্ষ সেখানে কাজ করবে ন, সেখানে অর্থনৈতিক অবস্থানের ভিত্তিতে শত্রু মিত্র নির্ধারণ হবে। এখন এই ইসলামী দলগুলোও প্রমান করতে পারে যে এরা গরীবের বন্ধু, শ্রমিকের বন্ধু তাহলে গরীব ও শ্রমিক ওদের পক্ষে যাবেই।'
'আমি আমার মায়ের জায়নামাজে বসে মহাভারত-রামায়ন পড়েছি, মানে একটা মুসলিম পরিবারের উদার আবহাওয়ার কথাটা বলতে চাচ্ছি। এটাকে আমি বলছি হিস্ট্রিক্যাল প্রিভিলেজ যা একজন মুসলিম হিসাবে আমার আছে। এক্ষেত্রে আমরা কোরআনকে যেমন আমাদের সংস্কৃতির অংশ করেছি, রামায়ন মহাভারতকেও করেছি, কিন্তু একজন হিন্দু পারিবারিক পরিবেশে তার আচার আচরণ বা ধর্মের মধ্যে উদারতার সে জায়গাটুকু নেই। এ কারণে দু' সম্প্রদায়ের মনোগাঠনিক স্তর বা অবস্থান ঐতিহাসিকভাবেই আলাদা, আমি বলছি না যে কে দোষী বা কে নির্দোষভ'
'আমি জাতি রাষ্ট্রে বিশ্বাস করি না, এটা ননসেন্স একটা কনসেপ্ট। রাজনীতি বিজ্ঞানে বলা হয়.... আমেরিকা, ভারত কি জাতি রাষ্ট্র? বাংলাদেশ জাতি রাষ্ট্র হবার কি আছে? একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র আমরা চাই, আধুনিক একটা রাষ্ট্র হিসাবে আমরা এর স্বাদ পেতে চাই। চাকমা, সাওতাল মুরংরাও এ দেশের নাগরিক থাকবে। আমি ব্যাক্তিগতভাবে যা পারি না রাষ্ট্র আমাকে সেক্ষেত্রে সহায়তা দেবে, কোনো ধর্মের ভিত্তিতে নয়। আমি সেকুলার রাষ্ট্র চাই।'