Pages

Sunday, December 2, 2007

হোয়াট এ্যা সারপ্রাইজ!!!

পৃথিবীতে কিছু মানুষ এক্সট্রা সেনসরি পারসেপশন ক্ষমতা নিয়ে আসে। তাঁদের বিস্ময়কর কর্মক্ষমতা প্রমান করে- তাঁদের রয়েছে একেবারে জেনুইন প্যারানরমাল পাওয়ার। বৃটিশ গীতিকার রোজমেরি ব্রাউন, আমেরিকার জীন ডিক্সন -(যিনি প্রেসিডেন্ট কেনেডির মৃত্যু সম্পর্কে ভবিষ্যতবাণী করেছিলেন বরাবর), ফ্রান্সের নস্ট্রাডমাস, লেখক আর্থার কেনান ডুয়েল এবং দানিয়েল ডি হোম প্রমুখ।এই এক্সট্রা সেনসরি পারসেপশন এর ব্যাপারটি নিয়ে আমি বিভিন্ন সময় ভাবি। মাইন্ড অভার ম্যাটার! বিস্ময়করই বটে!
ইস! আমার যদি অমন ক্ষমতা হতো!!
তবে বাস্তবে না-হলেও স্বপ্নে, ঘুমের ঘোরে, আমি অতীতে আমার মানবীয় শরীর নিয়ে দু'দিকে দু'হাত মেলে পাখির মতো উড়ে গিয়েছি এক স্থান থেকে অন্য স্থানে। ব্যাপারটি আমাকে খুব আনন্দ দিয়েছে। আমি ধ্যানমগ্ন হয়ে অতীত ভ্রমনের চেষ্টা করেছি। সুদূর অতীত- নিউটন, গ্যালিলিও, শেক্সপিয়রের সময়ে। পারি নি। পারার কথাও না।একদিন আমার এক ফিলিস্তিনি বন্ধু বলেছিলো, 'আলোর চেয়ে দ্রুত গতি আছে একটা জিনিসের।' আমি অবাক হয়ে প্রশ্ন করি-'কী সেটা?' সে হাস্যোজ্জল হয়ে বললো, 'থিংকিং-থট, থিংক ক্যান মোভ ফাসটার দ্যান লাইট স্পিড।' মানে 'চিন্তা'র কথা।
দু'জনেই হাসলাম। সে বললো,'স্টিফেন হকিংয়ের কাছে একটা চিঠি লেখা যায় এই মর্মে যে,স্যার ওয়ান থিং ক্যান গো ফাসটার দ্যান ফোটন-লাইট। ইট ইজ থিংক।'আবার দু'জনে হাসলাম। আমি বললাম 'বেচারা হকিং মটর নিউরন রোগাক্রান্ত। নইলে ধমক দিয়ে তোমার পেশাব ছুটাই দিতো।
'যাক, ঘটনা বলি একটা-
শেষ রাত পর্যন্ত জাগা থাকি ব'লে বেশ কয়েক বছর আমি ভোর কিংবা প্রত্যুষ দেখি না। ঘুমাই ভোরের কিছুক্ষণ আগে। খুব জরুরী হলে দুই/তিন ঘন্টা ঘুমিয়ে উঠে পড়ি। নইলে টাইট ঘুম শেষে উঠি বেলা এগারটায়। রাত জাগা পাখি হওয়ার অভ্যাসটা হয়েছে দেশে থাকতে পত্রিকায় নাইট শিফটে দায়িত্ব পালন করায়। মফস্বলের দৈনিক পত্রিকা অফিসে কলমের গুতোগুতি শেষ হতো রাত দু'টায়। তারপর ঘন্ঠাখানেক পার হতো গপসপে।
এখন তো পরবাসে ভিন্ন পেশায়।
সেদিন শেষ রাতেও ঘুম আসছিলো না। চলে গেলাম জগিং করতে কর্নিশে। সাগর পারের প্রলম্বিত পার্ক ওটা। শুরু করলাম ফিজিক্যাল এক্সারসাইজ-দৌড়। দৌড়ালে ক্লান্তি আসবে। ক্লান্তি এলে ঘুম আসবে। কিছুক্ষণ দৌড়ে বসলাম একটা বেঞ্চে। দৌড় মানসিক অস্থিরতা কমাতেও সাহায্য করে তা জানতাম। কখনো কখানো গভীর চিন্তা আক্রান্ত হলে আমি হাঁটতে থাকি উদ্দেশ্যহীন পথে পথে।প্রায় দশ মিনিট বসে উঠি ঘরে ফেরার জন্য।বিস্ময়কর ঘটনাটা ঘটলো তখন। সাগর উপর দিয়ে চারটি মানুষ উড়ে এলো আমার সামনে। এসেই সমস্বরে সালাম দিলো- 'আসসালামু আলাইকুম'। হতবাক আমি ওয়ালাইকুম সালাম বলে কিছু বুঝার চেষ্টা করছি। ওরা এক সাথে হেসে ওঠলো। ওদের মুখ নাই। গলা পর্যন্ত মানুষ। মুখমন্ডল মাথা নাই। গলা কাটা। তাজা রক্ত দেখা যাচ্ছে। অথচ মুখ বরাবর শুন্যতা থেকে বেরিয়ে আসছে ওদের কন্ঠধ্বনি। খুব স্বাভাবিক-রিলাক্সড। আমি বললাম, 'কে আপনারা? আপনাদের মাথামুখ কই? স্বাভাবিক জিন্দা আছেন কেমন করে? উড়ে এলেনই বা কেমন করে? ওরা একসাথে হেসে উঠলো এবং বললো- 'আমাদেরকে আপনি চিনেন আবার চিনেন না।' ওরা দু'জন পুরুষ দু'জন নারী। পোশাকে দেহাবয়বে কন্ঠের আওয়াজে বুঝতে পারলাম। বললো, 'আমরা আপনার শুভাকাঙ্খি। ভয় পাবেন না। আমরা ভার্চুয়াল জগতের মানুষ। চেনা কিন্তু অচেনা। ব্লগিং করি আপনার সাথে। আপনার লেখার সমর্থন করি।' একজন নারী কন্ঠ বললো 'আমি ইচ্ছাকৃত মজা করার জন্য আপনার বিরোধিতা করি।' আমি বললাম, কিন্তু এভাবে এখন এখানে এলেন! আমি ঠিক কিছু বুঝতে পারছি না! আপনাদের গলা কাটা কেন? ডান পাশের নারী কন্ঠ বললো, জগতের অনেক কিছুই বুঝার সাধ্যের বাইরে। থ্রিল এভরিহোয়ার! ডু নট গেট সিরিয়াস! আমরা ঠিক আছি। ভালো থাকবেন। যান ঘরে গিয়ে ঘুমান।' আমি জানতে চাই, আপনারা সবাই একে অন্যের পরিচিত?' সমস্বর জবাব 'না না, আমরা যাই। বাই বাই।' আমি বলি, 'আরো কিছু কথা বলুন।' ওরা সমস্বরে বললো, নো মোর টু ডে, বা বাই।'ওরা দু'হাত দু'দিকে মেলে ধরে উড়ে চলে গেল সমুদ্রের উপর দিয়ে।আমি ঘরের দিকে হাঁটতে শুরু করি। কিছুই বুঝলাম না এই ঘটনার আগামাথা! হোয়াট এ্যা সারপ্রাইজ!!!

No comments: